এবার ইরানের সাহসে কাতার দিলো হুমকি
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কাতারের তীব্র প্রতিক্রিয়া। দোহায় অনুষ্ঠিত আরব-ইসলামিক সম্মেলনে ইরানের “প্রতিরোধের মন্ত্র” যেন মুহূর্তেই কাজ করতে শুরু করেছে। এতদিন ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় নীরবতা বা সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখানো কাতার এবার সরাসরি কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যে আগুনে ঘি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি তেলআবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, দোহায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলা একেবারেই বৃথা যায়নি; বরং এটি ছিল কাতারের উদ্দেশ্যে একটি “বার্তা”। এই মন্তব্যকেই উস্কানি হিসেবে দেখছে কাতার।
কিছু ঘণ্টার মধ্যেই কাতারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারী কঠোর ভাষায় জবাব দেন। তিনি বলেন, “দোহায় হামলার নির্দেশ দিয়ে নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন। এর জন্য তাকে অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
আল-আনসারী আরও যোগ করেন, কাতার তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নেতানিয়াহু তার পুরোনো স্বভাবমতো প্রতিটি ব্যর্থতাকে ঢাকতে বেপরোয়া নীতি গ্রহণ করেন। কাতার এর সঙ্গে খুব ভালোভাবেই পরিচিত।”
হামাসকে ঘিরে নতুন দ্বন্দ্ব
কাতার দীর্ঘদিন ধরেই হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ২০১২ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের পর হামাসের শীর্ষ নেতারা দোহায় অফিস স্থাপন করেন। তখনকার মার্কিন সুপারিশেই কাতার তাদের জায়গা দেয়, যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল প্রয়োজনে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারে।
কিন্তু সেই কাতারেই হামলা চালিয়ে ইসরায়েল শুধু বিশ্বাসঘাতকতাই করেনি, বরং দেশটির রাজনৈতিক অবস্থানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। অনেক বিশ্লেষক দাবি করছেন, এ হামলার পেছনে ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীরব সম্মতি বা “গ্রিন সিগনাল।”
প্রতিরোধের পথে কাতার
এই অভিজ্ঞতার পর কাতার স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছে— একদিন ইসরায়েলের আগ্রাসন তাদেরও গ্রাস করতে পারে। তাই তারা ইরানের মতো প্রতিরোধের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, উপসাগরীয় দেশগুলো যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অঙ্গীকার করছে এবং সৌদি আরবও ধীরে ধীরে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
উপসংহার
মধ্যপ্রাচ্যের এই নতুন পালাবদল কেবল ইসরায়েল-কাতার দ্বন্দ্ব নয়, বরং আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়— কাতার কথার হুমকি বাস্তবে রূপ দেয় কি না, নাকি এটিও কেবল কূটনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল।
এবার ইরানের সাহসে কাতার দিলো হুমকি
