বিদেশি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ১১২ বিলিয়ন ডলার

বিদেশি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ১১২ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ আবারও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২৫ সালের জুন শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। তিন মাস আগেও এ ঋণের পরিমাণ ছিল ১০৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে ঋণ বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
গত বছরের একই সময় বৈদেশিক ঋণ ছিল ১০৩ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। শুধু বর্তমান সরকারের আমলেই বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
কেন বাড়ছে ঋণ?
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল রাখতে বাংলাদেশ বিভিন্ন দাতা সংস্থা যেমন—আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি ও জাইকা থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিচ্ছে। শুধু গত জুনেই এসব সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যায়। কয়েক বছরের মধ্যে ৮৫ টাকা থেকে ডলার দাঁড়ায় ১২২ টাকায়। এতে আমদানি খরচ বাড়ে, রিজার্ভ কমে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। সংকট সামাল দিতে সরকার বৈদেশিক ঋণের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ
সরকারি খাতের ঋণ তিন মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে।
বেসরকারি খাতে ঋণ সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের সতর্কবার্তা
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে সমস্যা নেই। কিন্তু অপচয় হলে ভবিষ্যতে পরিশোধে বড় ধরনের চাপ তৈরি হবে। বর্তমানে জিডিপির অনুপাতে ঋণ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও ঋণের সুদ ও কিস্তি পরিশোধের অঙ্ক দ্রুত বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক।
অতীতের তুলনা
২০০৬ সালে বৈদেশিক ঋণ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলার।
২০০৮ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।
২০১৩ সালের শেষে হয় ৩১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।
২০১৮ সালে ঋণ বেড়ে হয় ৫৭ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ সালের শেষে ঋণ দাঁড়ায় ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
আর ২০২৫ সালের জুনে এসে রেকর্ড ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *